ভালোবাসার কারণ হয় না
শাম্মী
ভালোবাসা একটা নির্দিষ্ট সময় আসে না বা একটা নির্দিষ্ট সময়ে ফুরিয়ে যায় না। এটার কোন লিমিটেশন নেই আসলে। এটা না কারো সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে আর না থাকে ধন-দৌলতে। শুধু থাকে কিছুটা অনুভূতি।
যেটা সব মানুষ ধারণ করতে পারে না। আর না পারে সব মানুষ প্রকাশ করতে।
কিছু মানুষ থাকে বিনাস্বার্থে ভালোবাসতে জানে। বিনা স্বার্থে দোয়ায় রাখতে জানে। যারা অপরের মিষ্টি হাসির মাঝে নিজের মনের প্রদীপ জ্বালায়।
শত ব্যথার মাঝেও নামটি ধরে মোনাজাতে অশ্রু ঝরায়। না বলা কথাগুলো বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করে। স্বচক্ষে দোষ পেলেও অবিশ্বাস করতে বার বার ভাবে।দূরে ফেলে আসার পরেও শুধু তাকেই ভাবে। শত অন্যায়ের পরেও শুধু তাকেই চায়।
এসব মানুষদের আসলে ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষমতা থাকে না। ফলে তাকে বুঝতে আমাদের কষ্ট হয়। না বুঝে অপমান, অবহেলা করে আমরা তাকে হারিয়ে ফেলি।
প্রিয়ার কালো ঝলমলে চুল সাদা হলে, সেই ডাগর ডাগর নয়নে আর চোখ তুলে না তাকালেও তাকে ভালবাসে ঠিক আগের মতোই।তাকে কাছে রাখতে চায় ঠিক আগের মতোই।আর এজন্যই এটা দীর্ঘস্থায়ী।
এটার লিমিটেশন নেই।না আছে রোজ ডে আর না আছে ভালোবাসা দিবস। জান্নাতেও তারা একসাথে থাকতে চায়। তাদের ভালোবাসার সমাপ্তি নেই।এই সম্পর্কের মাঝেই মাত্র ভালোবাসাটা শব্দটির যথার্থ প্রয়োগ হয়।অন্য ক্ষেত্রে বেমানান!!
গরম ভাতে বিড়াল বেজার
রেজা কারিম
মাদ্রাসায় পড়াকালীন মসজিদের প্রথাগত ইমাম হওয়ার কথা কখনোই ভাবিনি। ভাবতাম সমাজের,জাতির,বিশ্বের ইমাম হবো। তাই বলে নামাজ কায়েম করবো না তা হবে না। যদি এমপি হই তবে সংসদীয় আসনের সবচেয়ে বড় মসজিদে জুমার নামাজের খুতবা দেবো। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতি করবো আমার কর্মস্থলের পাশের মসজিদে। অথবা যখন যেখানে যেতে হয় সেখানেই।
পাশাপাশি বক্তা হবো। মাহফিলে মাহফিলে ছড়িয়ে দেবো হক কথার পুষ্পমাল্য। যেমনটা দেখেছি হযরত মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী রহ. এর বেলায়। একজন সংসদ সদস্য হয়ে তিনি কুরআনের তাফসির করেছেন। এভাবে আরো অনেকেই ছিলেন। বর্তমানে এটা দেখা যায় না। যদিও মেম্বার, চেয়ারম্যান পদে হয়তো কিছু থাকতে পারেন যারা রাষ্ট্রীয় নেতার দায়িত্বে থেকেও মসজিদের নেতার দায়িত্ব পালন করছেন। এটা কঠিন কোনো কাজ নয়। চাইলেই সম্ভব। সময় ও সিস্টেম তৈরি করে নিতে হয়।
দেশের নেতা তাদেরই হওয়া উচিত যারা নৈতিকতার আদর্শ ধারণ করেন। আমাদের চিন্তা করা উচিত বর্তমানে কতজন এমন নেতা পাবেন যারা নৈতিক চরিত্রের অধিকারী। হ্যাঁ কেউই শতভাগ পবিত্র নয়। তবে যে যতবেশি নৈতিকতার মানদন্ডে এগিয়ে থাকবে তারই ইমাম হওয়া উচিত।
মসজিদের ইমাম নিয়োগের সময় আমরা এটা দেখি কিন্তু রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের ইমামের ক্ষেত্রে এটা দেখি না। আমরা মার্কায় সিল দেই। অথচ আমাদের উচিত ছিল ব্যাক্তিকে নির্বাচিত করা। মার্কাকে নয়। মার্কা কেবলই একটা প্রতীক। ভালো মানুষ যেকোনো প্রতীকেই থাকুক তার থেকে ভালোটা পাবো।
অবশ্য এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। নির্বাচন কমিশনারদের প্রথমে সৎ হতে হবে। তাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। তাহলেই মনোনয়নের সময়ই মানুষকে মাপা যাবে যে সে কেমন চরিত্রের অধিকারী। আবার সবসময় তা হয়তো সম্ভব হবে না। কারণ ক্ষমতা না পেলেও মানুষ সৎ থাকে। ক্ষমতার দাপটে অসৎ হয়। তবু কিছু বিষয় থাকেই।
দেশের আইনেও মনোনয়নের সময় এসব অনেক বিষয় দেখা হয়। তবে তা আরো পরিষ্কার হতে হবে। চরিত্রকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।
জনপ্রতিনিধিদের কাজে-কর্মে সাহায্য করে থাকে সরকারি চাকুরিজীবীগণ। তাই তাদেরও সৎ হতে হবে। বিসিএস ক্যাডারদের চূড়ান্ত পর্যায়ের সৎ হতে হবে। পাশাপাশি মেধার প্রমাণ দিতে হবে। দুটোর একটাতেও ঘাটতি হলে তাকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া মানে জনগণের পায়ে কুড়াল মারা।