সূর্যমুখীর আত্মকথন।
-হৃদয় দেব নাথ

বুকে বিধে আছে বেয়নেট।আঙ্গুল অপেক্ষারত মস্তিষ্কের নির্দেশের।শুধুমাত্র কয়েক সেন্টিমিটার পিছিয়ে আসার নির্দেশ।তাহলেই ট্রিগার পৌছে যাবে তার কাংখিত গন্তব্যে।বুলেটের করুন আর্তনাদ,কথা ছিল ফুল হয়ে বাগানে যায়গা পাব।নির্দয় মস্তিস্ক হতে নির্দেশ আসলো আঙ্গুলে।সাথে সাথেই ইচ্ছের বিরুদ্ধে বেড়িয়ে পড়ল বুলেট।নিরব হয়ে গেল শিশুর কান্নারত ঠোঁট।ঝড়ে পড়তে থাকা রক্তবিন্দু নিরব সাক্ষী হয়ে রইল ঘটনাপ্রবাহের।বিবেক আবারো হেরে গেল মস্তিস্কের কাছে।সাত বছর বয়সী শিশুর বুকে সূর্যমুখীর বিজ হিসেবে বপন করা হলো বুলেট।যে বিজ হতে অঙ্কুরিত হওয়া চারা ধীক্কার জানাবে পৃথিবীকে।ফুল হয়ে ফুটে থাকবে কেবল প্রহসন।
আমার স্বপ্ন আমার বাংলাদেশ
জাহিদ হাসান নয়ন

আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে এমন একটি দেশ,যে দেশ হবে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মানবিকতার প্রতীক। যেখানে প্রতিটি নাগরিক ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রে নিজের অধিকার নিয়ে গর্বিতভাবে বসবাস করতে পারবে। পাশাপাশি দূর্নীতিমুক্ত,পরিবেশবান্ধব,আধুনিক শিক্ষায়ন ও চিকিৎসা থাকবে সহজলভ্য এবং নিজের মত প্রকাশে থাকবে না কোনো বাধা।
আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ শুধু আমার কল্পনাতেই নয়, ইনশাআল্লাহ আমাদের সবার প্রচেষ্টায় কঠোর পরিশ্রম,দেশপ্রেম ,সততা এবং সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে আমার ও আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে বাস্তবে রূপ দেবে। সেই প্রত্যাশায় আমার স্বপ্নে আমার বাংলাদেশ নিয়ে কিছু ভাবনা নিচে তুলে ধরা হলোঃ-

আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি বাংলাদেশের যেখানে প্রতিটি শিশু মানসম্মত শিক্ষা পাবে। শিক্ষা হবে সবার জন্য উন্মুক্ত। যুবসমাজ হবে দক্ষ, প্রযুক্তিনির্ভর এবং আন্তর্জাতিক মানের। শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন হবে আমাদের উন্নতির প্রধান চাবিকাঠি।


আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষা, চিকিৎসা, এবং ব্যবসায় উন্নতি সাধিত হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।


আমার স্বপ্নের বাংলাদেশে কেউই দারিদ্র্যের কারণে কষ্ট পাবে না। প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা যেমন খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, এবং চিকিৎসার নিশ্চয়তা থাকবে।এখানে সব মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকবে। নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হবে, যেখানে শিক্ষিত ও দক্ষ যুব সমাজ তাদের কর্মজীবন শুরু করতে পারবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে কৃষি, পশুপালন, এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিশেষ জোর দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য একটি জাতির প্রধান সম্পদ। আমার স্বপ্নের বাংলাদেশে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য আধুনিক এবং মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও থাকবে হাসপাতাল এবং ক্লিনিক। টেলিমেডিসিন ও ডিজিটাল হেলথ সেবার মাধ্যমে মানুষ দ্রুত এবং সহজে চিকিৎসা পাবে।

আমার বাংলাদেশ সবুজ ও শ্যামল থাকবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য গাছপালা রোপণ, পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ব্যবহার, এবং প্লাস্টিক দূষণ কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ একটি জলবায়ু সহনশীল দেশ হয়ে উঠবে, যেখানে নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, এবং বনাঞ্চল সুরক্ষিত থাকবে।

বাংলাদেশের হাজার বছরের গৌরবময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা হবে। বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত, এবং লোকজ সংস্কৃতি বিশ্বমঞ্চে পরিচিতি পাবে। আমাদের জাতীয় উৎসবগুলো আরো জাঁকজমকপূর্ণ হবে, এবং আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হৃদয়ে ধারণ করব।

আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ একটি দেশ, যা সারা বিশ্বের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। বাণিজ্য, প্রযুক্তি, এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়িয়ে একটি সমৃদ্ধিশালী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে জায়গা করে নেবে।


আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে একেবারে দুর্নীতিমুক্ত। সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হবে স্বচ্ছ, ন্যায়নিষ্ঠ, এবং জনকল্যাণমূলক। সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিক তার অধিকার পাবে এবং দায়িত্ব পালন করবে।


আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচারের দেশ। এখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই সমান অধিকার ও মর্যাদা পাবে।

আমি এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। ধর্ম, বর্ণ, বা ভাষার ভিত্তিতে কোনো বিভাজন হবে না। সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দুর্নীতি, সহিংসতা, এবং অন্যায় দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।

আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব তরুণদের ওপর। তারা হবে সৎ, সাহসী, এবং দেশপ্রেমিক। তরুণ প্রজন্ম তাদের জ্ঞান, দক্ষতা, এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেবে।

আমার স্বপ্ন পূরণে আমিও একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমি নিজের শিক্ষা, সততা, এবং কাজের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখব। আমি পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিয়োজিত করব।
আমি বিশ্বাস করি, যদি আমরা প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে সঠিক কাজ করি, তবে আমার ও আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ নেবে।

আমার স্বপ্ন শুধু কল্পনা নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ। এটি আমাদের দায়িত্ব যে, আমরা এই দেশকে একদিন বিশ্ব দরবারে সেরা অবস্থানে নিয়ে যাব। ইনশাআল্লাহ একদিন আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ সত্যি হবে—এটাই আমার আশা।
তাই, আমি বিশ্বাস করি এই স্বপ্ন একদিন বাস্তবায়িত হবে এবং বাংলাদেশ হবে বিশ্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।