নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন সুখবর আসতে যাচ্ছে। তাদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় এবারই প্রথমবারের মতো মহার্ঘ ভাতা গ্রেড অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে। পেছনের গ্রেডের কর্মচারীরা তুলনামূলক বেশি হারে এ ভাতা পাবেন, যেখানে সামনের গ্রেডে থাকা কর্মকর্তাদের জন্য ভাতার হার কম হবে। অর্থাৎ, নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা তুলনামূলক বেশি আর্থিক সুবিধা পাবেন।
মহার্ঘ ভাতার হার নির্ধারণ
অর্থ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহার্ঘ ভাতার একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। এই প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো হলো:
>>১ থেকে ৩ নম্বর গ্রেডে মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে ভাতা।
>>৪ থেকে ১০ নম্বর গ্রেডে ২০ শতাংশ।
>>১১ থেকে ২০ নম্বর গ্রেডে ২৫ শতাংশ।
এর মাধ্যমে সর্বনিম্ন ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭,৮০০ টাকা পর্যন্ত বেতন বাড়তে পারে। তবে, স্কেল পার্থক্যের কারণে কেউ ৪ হাজার টাকার কম ভাতা পাবেন না।
পেনশনভোগীরাও সুবিধার আওতায়:
মহার্ঘ ভাতা শুধুমাত্র কর্মরত কর্মচারীদের জন্যই নয়, যারা ইতোমধ্যে পেনশনে গিয়েছেন তারাও এ সুবিধা পাবেন। এটি বেসিক বেতনের সঙ্গে যোগ হবে, যা ভবিষ্যতে ইনক্রিমেন্টে প্রভাব ফেলবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা:
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজস্ব খাতের সীমাবদ্ধতার কারণে উন্নয়ন বাজেট থেকে কিছু অংশ সরিয়ে এই বাড়তি অর্থ প্রদান করা হবে। যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোয়, তাহলে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে এই মহার্ঘ ভাতা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ:
সরকারি চাকরিজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি সামলাতে মহার্ঘ ভাতা চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০১৫ সালে সর্বশেষ পে-স্কেল ঘোষণার পর আর কোনো বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্রমবর্ধমান দামে কর্মচারীদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস:
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই মহার্ঘ ভাতার বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। তবে কত শতাংশ হারে ভাতা দেওয়া হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
অর্থনৈতিক প্রভাব ও বাজেট ব্যবস্থা:
বর্তমান অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ করা হয়েছে ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। মহার্ঘ ভাতার জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। তবে, পরিচালন বাজেটের অন্য খাত থেকে এটি সমন্বয় করা হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এই মহার্ঘ ভাতা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।